রাজধানীতে হঠাৎ পেঁয়াজের ঝাঁজে বাজার উত্তপ্ত

রাজধানীতে হঠাৎই বেড়েছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। এই দু’টি পণ্য গত সপ্তাহের চেয়ে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে আমদানি করা বিদেশী পেঁয়াজ ৫০ টাকা বিক্রি হলেও গতকাল শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। একইভাবে গত সপ্তাহে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে। বিক্রেতারা বলছে, বাজারে দেশী পেয়াজ ও রসুনের সরবরাহ কমে যাওয়ায় আমদানি পণ্যের উপর নির্ভরতা বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে খুচরা বাজারেও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

এ দিকে কাঁচা বাজারগুলোতে বিক্রেতারা থরে থরে সাজিয়ে রেখেছে বিভিন্ন ধরনের শীতের সবজি। দেশে প্রচুর পরিমাণে শীতের সবজির উৎপাদন হলেও তার তেমন প্রভাব পড়ছে না দামে। শীতের সবজির ভরা মৌসুমেও আগের মতোই বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে সব ধরনের সবজি। টমেটো ও কাঁচা মরিচের বাইরে সপ্তাহের ব্যবধানে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বাজারে। এই দু’টি সবজির দাম কিছুটা কমলেও অন্যগুলো রয়েছে অপরিবর্তিত। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর খুচরা বাজারগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

খিলগাঁও বাজারে ক্রেতা আরেফিন বলেন, এখন শীতের সবজির ভরা মৌসুম। কিন্তু দাম কিছুতেই কমছে না। কয়েক মাস ধরে বাজারে প্রতিটি সবজি কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। নতুন সবজির বাজারে আসার পর দাম কমবে এমন আভাস দিয়েছিলেন বিক্রেতারা। শীত পড়তে শুরু করলেও এখনো বেশির ভাগ সবজির দাম আগের মতোই রয়ে গেছে। তবে কয়েক মাস ধরে যেমন চড়া দামে সবজি বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে কিছুটা কমেছে সবজির দাম।

রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে কাঁচা মরিচ ও টমেটোর বাইরে প্রায় প্রতিটি সবজির দামই সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো গতকাল বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর আর কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহের ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

এ ছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে সব ধরনের সবজির দাম। পোটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।

শিমের কেজি গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ফুলকপির পিস ৩০ থেকে ৫০ টাকা এবং বাঁধাকপির পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলা শাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম। গতকাল বিক্রি হয়েছে কেজি ২৬০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা পোলট্রি মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়, ফার্মের মুরগির ডিম গতকাল বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়।

তবে স্থিতিশীল রয়েছে মাছ ও গোশতের দাম। গরুর গোশত এখনো ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির গোশত ৮৫০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছও। এ ছাড়া শিং ও টাকি মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্য দিকে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, চিংড়ির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে। সূত্রঃ নয়া দিগন্ত। সম্পাদনা ম\হ। না ১২১১\০১

Related Articles