যোগাযোগ ডেস্কঃ
নিয়তির নিষ্ঠুর খেলায় নিমিষেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো রাজন ও সুমাইয়ার স্বপ্নের বাসর।
অনেক স্বপ্ন নিয়ে সোমবার উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে কবুল পড়ে তারা একে অপরকে জীবনসঙ্গী করে নেন।
কিন্তু বিধি বাম, একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এ নবদম্পতির সোনালী স্বপ্ন কেড়ে নিয়ে গেল। তাদের সঙ্গে চলে গেলেন আরও ৯ স্বজন।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামে বরের বাবা আলতাফ হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় উৎসবের পরিবর্তে চলছে সেখানে শোকের মাতম।
অশ্রুসজল হাজারো মানুষের ভিড়। পুরো গ্রামজুড়ে নিস্তব্ধতা। সবারই চোখে মুখে ফুটে উঠেছে স্বজন হারানোর বেদনা।
তবে রাজন শেখের বাসর ঘরটি ছিলো ফুলে ফুলে সুসজ্জিত। কিন্তু কোনো সুবাস ছিল না সেসব ফুলে। যেন প্রিয়জন হারানোর শোকে তারাও মুহ্যমান।
এ সময় বরের বাবা আলতাফ হোসেন জানান, প্রায় এক সপ্তাহ আগে উল্লাপাড়ার চরঘাটিনা গুচ্ছগ্রামের আবদুল গফুর শেখের মেয়ে সুমাইয়ার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় রাজনের। সোমবার দুটি মাইক্রোবাসে ৩০ জনের মতো বরযাত্রী নিয়ে সুমাইয়াদের বাড়ি যান আত্মীয়-স্বজন।
খাওয়া-দাওয়া শেষে কালিমা পড়ে বিয়ে পড়ানো হয়। বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকালে নব-দম্পতিকে নিয়ে মহাআনন্দে মাইক্রোবাসযোগে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন সবাই।
মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পৌঁছে যায় উল্লাপাড়া উপজেলার সলপ রেলস্টেশন এলাকায়।
এসময় স্টেশনের উত্তরে পঞ্চক্রোশী আলী আহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং পাড় হতে গেলে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই বর-কনেসহ ওই মাইক্রোবাসের ১১যাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
নিয়তির নিষ্ঠুর খেলায় নিমিষেই ভেঙে চুরমার হয়ে যায় সুমাইয়া ও রাজনের স্বপ্নের বাসর।