কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
শৃংখলিত জীবনের ৬৮ বছরের যন্ত্রণাদায়ক গ্লাণি থেকে আজ এই দিনে মুক্তি পেয়েছিল বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীরা। সেই ক্ষণটি উদযাপন করতে এ বছরও ৩১ জুলাই রাত ১২টা ১ মিনিটে ৬৮টি মোমবাতী প্রজ্জ্বলন করে ৪ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান পালন করল দেশের বৃহত্তম বিলুপ্ত ছিটবাসী দাসিয়ারছড়ার মানুষ। ভারতীয় সীমান্ত থেকে ৫ কিলোমিটার অভ্যন্তরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা শহরের মাঝখানে অবস্থান দাসিয়ারছড়ার।
সেই দাসিয়ারছড়ার কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্জলন করেন কুড়িগ্রামের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি মো. জাফর আলী। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির দাসিয়ারছড়া ইউনিটের সাবেক সভাপতি আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন, ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহজাহান মিয়া বাদশা, উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার প্রমুখ। ৬৮টি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন শেষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হয়। সন্ধ্যা থেকে আলোকসজ্জ্বায় সেজে উঠেছিল দাসিয়ারছড়ার প্রতিটি বাড়ি।
দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আয়োজন করা হয়েছে দিনব্যাপী খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। পাশাপাশি মসজিদে মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।
ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে সাবেক ছিটবাসীরা তাদের নাগরিকত্বসহ গত ৪ বছরে প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুত সংযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পাকা সড়ক, মসজিদ-মন্দির, ইন্টারনেট সংযোগ, ডিজিটাল সেন্টারসহ সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের কারণে বদলে গেছে অধুনালুপ্ত ছিটমহলের জীবনমান।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্য রাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মুজিব-ইন্দিরা স্থল সীমান্ত চুক্তি’র বাস্তবায়ন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দিন বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ১১১টি ছিটমহল এবং ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১ টি ছিটমহল দুই-দেশের ভু-খন্ডে যুক্ত হয়। দীর্ঘ ৬৮ বছরের বঞ্চনার পর ১৬২টি ছিটমহল একীভূত হয়ে নাগরিকত্ব লাভ করেন এবং তারা বাংলাদেশ-ভারতের নাগরিক হবার সুযোগ পান।