কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকদের ফোন নাম্বার তার ব্যক্তিগত ফোনে ব্লক করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষ প্রয়োজনে তাকে ফোন করা হলে ব্যস্ততার কথা বলে এড়িয়ে গিয়ে নাম্বারটি ব্লক করে দেন বলে অভিযোগ করেন সাংবাদিকরা।
অভিযোগে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত একাধিক সাংবাদিকের মোবাইল নাম্বার ব্লক করে রেখেছেন উপাচার্য। তার মোবাইলে ব্লকের তালিকায় অন্তত দুই ডজন শিক্ষক ও সাংবাদিক রয়েছেন বলে জানা যায়।
অন্যদিকে খবরের তথ্যের প্রয়োজনে তার কার্যালয়ে সংবাদকর্মীরা গেলে সহজে সাক্ষাৎ পাওয়া যায় না। আগে প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে সময় নিয়েও অনেক সময় বসে থাকতে হয় সংবাদকর্মীদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষ স্থানীয় জাতীয় দৈনিকের এক সাংবাদিক বলেন, সংবাদের গুরুত্ব অনুযায়ী অনেক সময় উপাচার্যের বক্তব্য প্রয়োজন হয়। কিন্তু কয়েক মাস আগে তিনি আমার নাম্বার কালো তালিকায় রেখেছেন।
তিনি বলেন, একজন উপাচার্য শুধু ব্যস্ততার অজুহাতে এমন কাজ করা খুবই লজ্জার বিষয়। ফলে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের জন্য উপাচার্যের বক্তব্য না পেয়ে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এ ছাড়া উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, উপাচার্য তার একক ক্ষমতায় আমাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছেন। এমনকি তিনি গত অর্থ কমিটির সভায় এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি সি-গ্রেডের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে চিহ্নিত করেন। শিক্ষকদের দেয়া সুযোগ-সুবিধাকে অনেক বেশি বলে দাবি করেন।
সাংবাদিকদের ফোন নাম্বার কালো তালিকায় রাখার বিষয়ে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর সাকিব বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থেই কাজ করি। কিন্তু উপাচার্যের অসহযোগিতা সে কাজকে বাধাগ্রস্ত করে। অধিকাংশ সাংবাদিকের মোবাইল নাম্বার ব্লক করার কারণে সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিকদের সমস্যায় পড়তে হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তোমরা (সাংবাদিক) আমাকে কল দিও না। তোমরা উপাচার্যের বক্তব্যকে এত সস্তা করো না। সবার সঙ্গে কথা বলা আমার সম্ভব নয়। তোমাদের যদি উপাচার্যের বক্তব্য এতই প্রয়োজন হয়, তা হলে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিকের নাম্বার আমাকে লিখে দিও আমি সেগুলো সংগ্রহে রাখব।
তবে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম্বারও তিনি ব্লক করে রেখেছেন বলে জানা যায়।