চীনে ৯৯ শতাংশ পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ-চীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে দু’দেশের মধ্যে চারটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী- বাংলাদেশ চীনে আগের চেয়ে এক শতাংশ বেশি শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।

আজ (রোববার) সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং বাংলাদেশে সফররত চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের জানান, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী চারটি চুক্তি ও সমঝোতা সই করেছেন। এগুলো হচ্ছে- পিরোজপুরে অষ্টম বাংলাদেশ-চায়না মৈত্রী সেতুর হস্তান্তর সনদ, দুর্যোগ মোকাবিলা সহায়তার জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারকের নবায়ন, ২০২২-২৭ মেয়াদে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা সমঝোতা স্মারকের নবায়ন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চীনের ফার্স্ট ইনস্টিটিউট অব ওশেনোগ্রাফির মধ্যে মেরিন সায়েন্স নিয়ে সমঝোতা স্মারক।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি রপ্তানিনির্ভর। তার জন্য একটা সুসংবাদ। সেটি হচ্ছে ৯৮ শতাংশ আইটেমে (চীন) ডিউটি ফ্রি করেছিল। বাকি যে ২ পারসেন্ট, এটা সব সময় তাই হয় যে কোনো দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, দেখা যায় এটাতে সবচেয়ে বেশি সেনসিটিভিটি ও গুরুত্ব থাকে। উনারা ১ সেপ্টেম্বর থেকে আরও অতিরিক্ত ১% শতাংশে ডিউটি ফ্রি সুবিধা দেবেন।”

বাংলাদেশের কোন কোন পণ্য বা সেবা ওই ১ শতাংশের আওতায় থাকতে পারে সেই ধারণা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমি মনে করি, বাংলাদেশের বিশেষ করে গার্মেন্টস এবং উভেন প্রডাক্টসে কিছু লিমিটেশনস ছিল, আরও বেশি কিছু প্রডাক্টে লিমিটেশনস ছিল, আমরা বিকাল নাগাদ তালিকাটা পাব। (চীনের) কমার্শিয়াল কাউন্সিলর দূতাবাসে ফিরে গেলে তালিকাটা প্রেসকে দেবেন বলেছেন। সুতরাং আপনারাও পাবেন।”

বাড়তি এই ১ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চীনা মন্ত্রীর সফরে বাংলাদেশের জন্য ‘সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি’ বলে মন্তব্য করেন শাহরিয়ার আলম।

মোমেন-ওয়াং ই বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। তারা চেষ্টা করছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলো কারণে শুধু বাংলাদেশ না, অনেকেরই সমস্যা হচ্ছে। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গা সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানে চীন অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে।

তিনি আরও জানান, চীন পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের জন্য একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যৌথ সহযোগিতা চায়। এ উদ্যোগে তারা বাংলাদেশকে পাশে চায়। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলোচনায় উল্লেখ করেছেন, কিছু রাষ্ট্র আছে, যারা ভুল বোঝে বা চীনকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে। ওই বিষয়ে কিছুটা কথা হয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরের চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষেই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে। সুত্রঃ পার্সটুডে। সম্পাদনা ম\হ। না ০৮০৭\০৪

Related Articles