বাংলা অডিও গানের যুবরাজ খ্যাত সংগীত শিল্পী আসিফ আকবর। তার প্রথম অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ এতটাই জনপ্রিয় হয় যে ৫০ লাখেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছিল। বিরহের গান দিয়েই শ্রোতাদের কাছে বেশি জনপ্রিয় তিনি।
বর্তমান সময়ে এসেও তিনি একের পর এক সুপারহিট গান উপহার দিচ্ছেন শ্রোতাদের। বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী গান গাওয়ার পাশাপাশি মিউজিক ভিডিওর মডেল হচ্ছেন তিনি।
আসন্ন ঈদুল ফিতর, বর্তমান ব্যস্ততা ও নিজের ভালো লাগা-মন্দ লাগা এবং চলমান করোনাভাইরাস নিয়ে মুখোমুখি হলেন। লিখেছেন মহিব আল হাসান।
শৈশবের ঈদ
ছোটবেলার ঈদ সবসময় মজারই হয় তখন বয়স কতই হবে ছয় সাত বছর হবে। কুমিল্লা পার্কের মধ্যে দুটি সাগর ছিল একটি ধর্ম সাগার আরেকটা ছিল ব্যঙ সাগর। আর আমরা ছোট যারা ছিলাম তারা ছোট সাগরে গোসল করতাম। আমার আবার বাজি ফোটানোর খুব নেশা ছিল। ঈদের আগের দিন রাতে বাজি কিনতাম। গোসল করার পর বাজি ফোটতাম। বাজি ফোটানোর পর নামাজ পড়তে যেতাম।
নতুন পোশাকের আবেদন কেমন ছিল আপনার?
আমারা ভাইবোনের সবাই একইরকম পোশাক পরতাম। আমাদের এলাকায় টেইলারস ছিল, তাদের একটা অবশ্য সিস্টেম ছিল আগে আসলে আগে পাবেন। আমি অবশ্য তাদের ওই সিস্টেমটা কাজে লাগাতাম। আমার ভাইবোনেরা রাতের বেলা ঘুমাতো কিন্তু আমি ঘুমাতাম না। টেইলারে গিয়ে সারারাত বসে থাকতাম। সবার আগে আমি আমার পোশাকটা নিয়ে এসে লুকিয়ে রাখতাম।
শৈশবের ঈদের কোনো স্মৃতি এখনও কি নাড়া দেয় মনে?
তখনকার সভ্যতা ছিল একদম গ্রামীণ। আর এখন সভ্যতা হয়ে গেছে শহর কেন্দ্রিক। তবে সেই সময় কী করছি আর এখন কী করছি তার একটা আবহাওয়া রাখার চেষ্টা করা হয়। তবে আগের দিন তা তো চলেই গেছে। ছোটবেলার দলবেঁধে ছোটাছুটি এখনও মিস করি।
ঈদি বা সালামির বিষয়টি জানতে চাই...
আমাদের সময়ে সালামির প্রাদুর্ভাব খুব একটা ছিল না। তবে আমার বড় খালা ও আমার চাচা এবং আমার ফুফাতো ভাই অথ্যাৎ তখন যারা চাকরি করতেন তারাই দিতেন। ওই দুই টাকা পাঁচ টাকা। তখন এক টাকা দুই টাকায় বিরাট টাকা ছিল। তখন হরিণ মার্কার নোট ছিল। ওই নোটটা পাঁচটা দিলে পাঁচ টাকা হয়ে যেতে। হরিণ মার্কা এক টাকার নোটের প্রতি দুর্বল ছিলাম।
এখন পায়ে হাত দিয়ে সালাম দেখা যায় না, কী বলবেন?
সালামটা আসলে প্রথাগত ব্যাপার। আমাদের পরিবারের নানা দিক বলতে গেলে তারা অবশ্য মর্ডান তো তাদের দিক থেকে সালাম করতে দিত না। আবার অন্যদিকে আমার দাদার দিকে বললে, সালাম না করলে বেয়াদপ মনে করত। তবে আমি আমার ভাইয়া-ভাবিদের পায়ে ধরে সালাম করি। সালামের বিষয়টি এখনো ঠিক আছে।
সেলিব্রেটি হওয়ার পর ঈদ কুমিল্লায় করতে পেরেছেন না আর করার সুযোগ হয়নি?
সেলিব্রেটি হওয়ার পর দেশের বাহিরে কয়েকটি শো করার কারণে চার থেকে পাঁচটি ঈদ কুমিল্লার বাহিরে করা হয়েছে। তা ছাড়া কুমিল্লায় বাহিরে ঈদ করা পড়েনি।
ঈদের কেনাকাটা সম্পর্কে যদি বলতেন...
এই বিষয়টি আমার স্ত্রী ঠিক করে নিতো। ও ১৯৯৫ সালের দিকেই বুঝে ফেলেছে আমি আরামপ্রিয় লোক। ওই সব কিছু করত। নিজ দায়িত্বে এখনো সে কেনাকাটার কাজগুলো নিজ দায়িত্বে করে যাচ্ছে।
নগরের ঈদ উৎসব, গ্রামের আমেজের মতো কিনা?
গ্রামের ঈদ আর শহরের ঈদ পার্থক্য হচ্ছে গ্রামে ঈদ শুরুটা যত তাড়াতাড়ি শেষটাও হয় ততো তাড়াতাড়ি। শহরে ঈদের আমেজ লেগেই থাকে। গ্রামে সন্ধ্যা নামলেই তা শেষ।
এবারের ঈদে কী করবেন?
এবারের ঈদে দোয়া করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। একদিকে রোগ আরেকদিকে মানুষের অভাব। বাংলাদেশের যে অবস্থা। সবমিলিয়ে আমাদের দেশটা ছোট আর মানুষও বেশি। তাই এবারের ঈদ আনন্দ কমিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই উচিত।
আমার পক্ষ থেকে এবারের নিজেদের জন্য কিছু না করে চারপাশের মানুষ যারা সমস্যায় আছেন তাদের সহযোগিতা করছে। হয়তো আমার পক্ষ থেকে এমন চিন্তা করেছি। সূত্রঃ সময়টিভি। সম্পাদনা আ/হো। ম ১৩০৫/১০