প্রবাসী বাংলাদেশি ৫০ হাজার নারী কাজ করছে জর্ডানে

২০১০ সাল থেকেই ব্যবসায়িক চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ জর্ডানে শ্রমিক রপ্তানি করে আসছে। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ হাজার নারী শ্রমিক জর্ডানের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কাজ করছে বলে জানা গেছে।

তবে দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে সেখানে প্রায় ৪৭ হাজার বাংলাদেশি নারী শ্রমিক পোশাকখাতে কাজ করছে।

বাংলাদেশের বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং সেবা বিভাগের কোম্পানি সেক্রেটারি মো. আব্দুস সোবহান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশি নারীদের জন্য অর্থ উপার্জনের এটি একটি দারুণ মাধ্যম। বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলেই একজন নারী জর্ডানে চাকরি পাওয়ার সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।’

জর্ডানের পোশাক কারখানায় কাজ করে একজন নারী প্রতি মাসে ২৬০ ডলার থেকে ৩৬০ ডলার পর্যন্ত উপার্জন কর‍তে পারে বলে জানান আব্দুস সোবহান। বাংলাদেশে যেখানে একজন নারী পোশাক কারখানায় কাজ করে প্রতি মাসে গড়ে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা করে পাচ্ছে, সেখানে একই অভিজ্ঞতায় জর্ডানের পোশাক কারখানায় কাজ করে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা সম্ভব।

করোনা মহামারি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে শুরু করেছে জর্ডান। ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৩ হাজার ৭০০ পোশাকশ্রমিক আমদানি করে জর্ডান। কিন্তু চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ১২ হাজার ৩০০ শ্রমিক জর্ডানে কাজের সুযোগ পেয়েছে বলে জানা যায়। দেশটি দুই বছর মেয়াদি চুক্তিতে বাংলাদেশ থেকে পোশাকশ্রমিক আমদানি করছে।
২০১০ সাল থেকেই ব্যবসায়িক চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ জর্ডানে শ্রমিক রপ্তানি করে আসছে।

একটি সমীক্ষার জরিপ থেকে দেখা যায়, জর্ডানে কাজ করা বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের দুই তৃতীয়াংশই পোশাক কারখানায় কাজ করে। এ ব্যাপারে জর্ডানের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানই তাদের ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করে দেয় বলে জানা গেছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কর্মচারীদের ভ্রমণ ভাতা, বাসস্থানের সুবিধা এবং চিকিৎসা সুবিধা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের (বিএনএসকে) একটি জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের গ্রামঞ্চলের বিদেশগমনেচ্ছু নারীরা মূলত জর্ডানের দেওয়া এসকল সুবিধার জন্যই মধ্যপ্রাচ্যে কর্মসংস্থানের জন্য পছন্দের তালিকায় জর্ডানকে এগিয়ে রাখে। যেখানে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশে নারী শ্রমিকরা অকথ্য নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সেখানে এক দশক ধরে জর্ডান সুনামের সাথে বাংলাদেশ থেকে নারী শ্রমিক আমদানি করে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ব্র্যাকের অভিবাসন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, জর্ডানে আরও নারী কর্মী পাঠানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছে ব্র্যাক। বাংলাদেশের নারীদের স্বনির্ভর হওয়ার জন্য জর্ডানের পোশাকখাতে কাজ করা একটি বড় সুযোগ বলে মনে করেন শরিফুল হাসান।

এ ব্যাপারে জর্ডানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। জর্ডানের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য সরকারি এজেন্সি- জর্ডান চেম্বার অব কমার্স, জর্ডান গার্মেন্টস এক্সোসরিস এবং সংশ্লিষ্ট পোশাক কারখানার মালিকদের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ বজায় রাখছি।’ সূত্র- আরব নিউজ। সম্পাদনা ম/হ। রু ২৯১১/১২

Related Articles