লোক দেখানো আমলের পরিণতি ভয়াবহ!
- by Suma Akhter
- October 14, 2024
- 41 views
ছবি: সংগৃহীত
যেকোনো ধরনের আমল কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো তাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। আর তা অর্জন হয় বিশুদ্ধ নিয়তের মাধ্যমে। তাই আমল করার আগেই নিয়ত যাচাই-বাছাই করা। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই সব আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।
(বুখারি, হাদিস : ১)
আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের বাহ্যিক আকার-আকৃতির প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না। তবে তিনি তোমাদের অন্তরের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৩৬)
যার ইবাদতে একনিষ্ঠতা, বিশুদ্ধতা ও ইখলাসের মান যত বেশি তার ইবাদতের সওয়াবও তত বেশি। বোঝা গেল, যে যত বেশি ইখলাসের সঙ্গে ইবাদত করবে, সে তত বেশি সওয়াব লাভ করবে।
ইবাদত ছোট হোক বা বড় হোক, তা মুখ্য বিষয় নয়। সওয়াবের এই ব্যবধানের কারণ ইখলাস। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমার ঈমান খাঁটি করো, অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট।’ (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৬৪৪৩)
লোক-দেখানোর উদ্দেশ্যে যে ইবাদতই করা হয়, তার কোনো সওয়াব নেই; বরং তা গুনাহ ও বর্জনীয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! খোঁটা দিয়ে ও কষ্ট দিয়ে নিজেদের সদকা ওই ব্যক্তির মতো নষ্ট কোরো না, যে নিজের সম্পদ ব্যয় করে মানুষকে দেখানোর জন্য এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে না।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৬৪)
প্রচারের উদ্দেশ্যে ভালো কাজ ক্ষতির কারণ। পরকালে এর জন্য কঠিন শাস্তি হবে। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হুব্বুল হুজন থেকে তোমরা আল্লাহর কাছে পানাহ (আশ্রয়) চাও। সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! হুব্বুল হুজন কী? তিনি বলেন, জাহান্নামের একটি উপত্যকা।
এ থেকে খোদ জাহান্নামও প্রতিদিন ১০০ বার পানাহ চায়। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কে তাতে প্রবেশ করবে? তিনি বলেন, ওই সব কারি (কোরআন পাঠক), যারা লোকদের দেখানোর জন্য আমল করে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮৩)
কিয়ামতের দিন লোক-দেখানো কোরবানিদাতার ভয়াবহ অবস্থা হবে। লোক-দেখানোর কারণে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘লোকের মধ্যে কিয়ামতের দিন প্রথম (দিকে) যাদের বিচার করা হবে, তারা হবে তিন শ্রেণির লোক। প্রথমত, সে ব্যক্তি যে শহীদ হয়েছে, তাকে আনা হবে।
আল্লাহ তাআলা তাকে তার নিয়ামত স্মরণ করাবেন। সে তা স্বীকার করবে। অতঃপর আল্লাহ তাকে বলবেন, এসব নিয়ামত ভোগ করে তুমি কী আমল করেছ? সে বলবে, আমি আপনার সন্তুষ্টির জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছি।
আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ; বরং তুমি যুদ্ধ করেছিলে এই জন্য, যেন বলা হয় অমুক ব্যক্তি বাহাদুর। তা বলা হয়েছে। তার সম্পর্কে আদেশ করা হবে, ফলে তাকে অধোমুখে হেঁচড়িয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৩১৩৭)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে একমাত্র তাঁর জন্য যাবতীয় ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। সূত্র: কালের কন্ঠ/ স/হ/ন 14/10/2024