আজ রোডম্যাপ ঘোষণা করবে ইসি

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মোটামুটি ১০টি বিষয়কে প্রধান্য দিয়ে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। আজ বুধবার সকাল ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে এ রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান।

গতকাল মঙ্গলবার তিনি জানান, বুধবার (আজ) আগামী জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় অন্য কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৩ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ নেয়ার পরেই সমাজের বিশিষ্ঠজনদের সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে মূলত কাজী হাবিবুল আউয়ালের কমিশন তাদের কাজ শুরু করে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্য নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন, আইন সংশোধন, সীমানা পুনর্নির্ধারণ, দল ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে সংলাপ, দল ও পর্যবেক্ষণ সংস্থার নিবন্ধনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এ রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। গুরুত্ব দেয়া হয়েছে লাখ লাখ এনআইডি সংশোধনের বিষয়টিও।

তবে ইসির রোডম্যাপ তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, এবারের কর্ম পরিকল্পনায় মোটামুটি ১০টি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে-নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন, যা চলমান। আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার। নির্বাচন প্রক্রিয়া সময়োপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ নেয়া, অর্থাৎ সংলাপের আয়োজন। জনশুমারি ও ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে জিআইএস পদ্ধতিতে নির্বাচনি এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত ডাটাবেজ তৈরি ও তার প্রয়োগ। এজন্য আগের নীতিমালা পর্যালোচনা করে আগামী বছরের জানুয়ারিতে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে রোডম্যাপে। এছাড়া নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও নিবন্ধিত দলের নিরীক্ষা, নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন ও নবায়ন কার্যক্রম। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসি সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বাড়ানোর কার্যক্রম, যাতে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া যায় ও কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। নির্বাচনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার (ইভিএমের ব্যবহার ও তার জন্য প্রকল্প নেয়ার কাজ, যা চলতি বছরের মধ্যে শেষ করতে চায় ইসি। ইভিএমে ভোটের ক্ষেত্রে সংসদীয় আসন নির্বাচনের পদ্ধতি নির্ধারন, ভোটার ও ভোট কর্মীদের প্রশিক্ষণ, যা আগামী বছরের প্রথম থেকে শুরু করা হবে। নির্বাচনী কার্যক্রমে গণমাধ্যমকে আইনি কাঠামোর আওতায় সম্পৃক্তকরণ, সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে কীভাবে যুক্ত করা যায় সে বিষয়ে আইন সংশোধন ও ভোটারদের সচেতনতা বাড়ানোর কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনা রয়েছে দেশি বিদেশি পর্যবেক্ষক, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সঙ্গে মতবিনিময়ের। আগামী মাসে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সংলাপ হবে। একই মাসে নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপ ও আগামী নভেম্বরে নারী নেতাদের সঙ্গেও সংলাপ করার বিষয়টিও রাখা হয়েছে। এছাড়া ওই মাসেই সুপারিশমালার খসড়া চূড়ান্ত করা ও ডিসেম্বরে সুপারিশমালা চূড়ান্ত করা করা হবে।

আর এসব কাজ ইসি দ্রুত শেষ করতে সময় নির্ধারণ করেছে রোডম্যাপে। ধাপে ধাপে সব কাজ শেষ করার পরে নির্বাচনের বাজেট, ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা, ভোট কর্মীদের তালিকা তৈরি, নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ, দেশি-বিদেশি সংস্থা ও দলের সঙ্গে আলোচনা এবং প্রচার কাজে শৃঙ্খলা আনার বিষয়টিও রোডম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা।

তবে প্রতিটি নতুন কমিশন (ইসি) দায়িত্ব নেয়ার পর জাতীয় সংসদসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন সুসম্পন্ন করতে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে, আর সে হিসেবে তারা কাজ এগিয়ে নেয় এটাই নিয়ম।সুত্রঃ ভোরের কাগজ। সম্পাদনা ম\হ। বৈ ০৯১৪\০৬ 


 

Related Articles