শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় শীর্ষে লেখক সলিমুল্লাহ খান

সলিমুল্লাহ খান। ফাইল ছবি

বর্তমান সময়ের যদি শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করা হয় তাহলে সর্বপ্রথম উঠে আসবে লেখক সলিমুল্লাহ খানের কথা। প্রতিথযশা এই লেখক জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।তার রচনায় কাল মার্ক্স, জাঁক লাকা, শার্ল বোদলেয়ার এবং আহমদ ছফার প্রভাব সমৃদ্ধ।সৃজনশীল এবং প্রতিভাবান লেখক সলিমুল্লাহ খান। তার রচনা ও বক্তৃতায় আন্তর্জাতিক সমাজ,রাজনীতি সংস্কৃতি ও সাহিত্যের বিশ্লেষণ মানুষকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে।

সলিমুল্লাহ খান ১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মহেশখালীতে বেড়ে ওঠেন।তার পিতার নাম কলিমুল্লাহ খান এবং মায়ের নাম মোস্তফা বেগম খান।তার বাবা ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ। তারা পাঁচ ভাই তিন বোন। সলিমুল্লাহ খান চতুর্থ। বড় তিন ভাই ও ছোট তিন বোন।

সলিমুল্লাহ খান পড়াশোনা করেছিলেন সিপাহিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।পরে তিনি মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি হয়েছিলেন চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাস করেছিলেন ১৯৭৩ সালে এবং ১৯৭৫ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করেছিলেন।১৯৭৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বোর্ড হতে মানবিক বিভাগের সলিমুল্লাহ খান প্রথম স্থান অধিকার করেন। এরকম অসাধারণ ও কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করার জন্য তখনকার বড় মহেশখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে ১৯৭৬ সালে একটি সংবর্ধনের আয়োজন করা হয়েছিল। একটি স্বর্ণপদক দেয়া হয়।অভিস্মরণীয় হয়ে আছেন মহেশখালীর উপজেলার জনগণের কাছে সলিমুল্লাহ খান।

আলম খোরশেদ বলেন, "১৯৭৬ সালে একদিন শোনা গেল চট্টগ্রাম কলেজের পড়ুয়া মহেশখালীর কোন এক গ্রামে ছেলে নাকি আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীকে চ্যালেঞ্জ করে বসেছে।পরে দেখা গেল তিনিই প্রথম হন"।

১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন।সলিমুল্লাহ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ হতে ১৯৭৮ ও ১৯৭৯ সালে কৃতিত্বের সাথে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির লাভ করেন।১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বর হতে তিন বছরের জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিলেন সিনেট সদস্য হিসেবে ছিলেন।এরপর ১৮৮৩ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মজীবন শুরু করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বেশিদিন শিক্ষকতা তিনি করেন নি।পরবর্তীকালে তিনি ১৯৮৪ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ তে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেছিলেন।

ছাত্রাবস্থায়, ১৯৭৬ সালে আহমদ ছফার সাথে সলিমুল্লাহ খানের পরিচয় হয়। আহমদ ছফার মাধ্যমে অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে পরিচয় হয় সলিমুল্লাহ খানের। এ পর্যায়ে কিছু সময়ের জন্য তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের ছাত্র শাখার সাথে জড়িত ছিলেন।যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্কের দ্যা নিউ স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় তিনি দীর্ঘ কাল অধ্যয়ন ও গবেষণা করেন। এখানে তার সর্বশেষ অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিলো "ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং তত্ত্ব, ১৭৯৩-১৮৭৭।" এ অভিসন্দর্ভের জন্য তাকে পিএইচডি ডিগ্রি দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস কর্মরত আছেন।

আজ এই মহান লেখক,চিন্তাবিদ,গবেষক, অনুবাদক এর জন্মদিন।গুরু সলিমুল্লাহ খানের ৬৫ জন্মবার্ষিকীতে আপনার এর প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। সুস্থ থাকুন,ভাল থাকুন। আরো বেশি করে আমাদের শিখাতে থাকুন। এই কামনা করি।

স্যার আপনার জন্য প্রার্থনা করি আল্লাহ্ আপনার দীর্ঘ আয়ু দান করুক।

Related Articles