শীর্ষস্থানে তুমুল প্রতিযোগিতায় ৫টি দৈনিক দরকার
- by Adib Hossain
- May 4, 2021
- 930 views
নাঈমুল ইসলাম খান:[১] মুনিয়ার আত্মহত্যা এবং আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা বিষয়ে মূলধারার সংবাদপত্র নিরব বলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া।
[২] কেন এই অভিযোগ উঠেছে আমি সেটা একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে বিশ্লেষণের চেষ্টা করছি। আরও ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতেও আমরা এর বিশ্লেষণ করতে পারবো।
[৩] তবে এই বিশ্লেষণে যাওয়ার আগে এই বিষয়ে যেসব নীতিহীন নোংরা সাংবাদিকতা হচ্ছে সেই ব্যাপারে আমার ঘৃণা রেকর্ড করে রাখছি।
[৪] বাংলাদেশের জাতীয় বাংলা দৈনিক সংবাদপত্র গুলোর মধ্যে প্রথম শীর্ষ অবস্থানে প্রথম আলো এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন সর্বমোট পত্রিকা বিক্রির ৫০ শতাংশ বলে আমার বিশ্বাস। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ বাংলাদেশ প্রতিদিন অপর ২৫ শতাংশ প্রথম আলো (মোটামুটি)।
[৫] দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে যুগান্তর, কালের কন্ঠ, ইত্তেফাক, আমাদের সময় এবং সমকাল, মিলে হবে অপর ২০ শতাংশ। এই গ্রুপের একেকটি পত্রিকার সাথে শীর্ষ যে কোনোটির প্রচার সংখ্যার পার্থক্য বিশাল।
[৬] তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে মানবকণ্ঠ, দেশ রূপান্তর, আমাদের নতুন সময়, ভোরের কাগজ, সংবাদ, মানবজমিন, নয়াদিগন্ত, ইনকিলাব ইত্যাদি মিলে হবে ২০ শতাংশ। অন্যান্যরা ১০ শতাংশ।
[৭] মুনিয়া-আনভীর বিষয়ে খবরগুলো বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পূর্ণ ব্ল্যাক আউট করে রেখেছিলো। কিছুই ছাপেনি। প্রথম আলো খবর ছেপেছে কিন্তু ট্রিটমেন্ট দিয়েছে বেশ কমিয়ে, যেনো কিছুটা আড়াল করা হয়েছে।
[৮] দেশে প্রথম ধাপের শীর্ষস্থানীয় দুই সংবাদপত্রের মধ্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন এই বিষয়ে কোনো প্রতিবেদনই করেনি।
[৯] শীর্ষ দ্বিতীয় ধাপের পত্রিকাগুলোর কোনো কোনোটা হয় প্রতিবেদন করেনি নতুবা গুরুত্ব কম দিয়ে ছেপেছে।
[১০] শীর্ষ তৃতীয় ধাপের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা, দ্বিধা বিভক্তি।
[১১] উপরোক্ত বিবেচনায় সামগ্রিকভাবে দ্বিধা বিভক্তিটাই ফুঁটে ওঠে।
[১২] তবে অন্যান্য অনলাইন সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যম মুনিয়া আনভীরের খবর মূলধারার কোনো না কোনো গণমাধ্যম থেকেই পেয়েছেন এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছেন। একথাও মানতে হবে।
[১৩] বাংলাদেশে সংবাদপত্রের দুইটি প্রধান গ্রুপের অপ্রতিদ্বন্দ্বি প্রভাব ও প্রতিপত্তি এখানে ছিলো নিয়ামক।
[১৪] যথেষ্ট সংখ্যক পত্রিকা খবর করলেও তাদের সার্কুলেশন স্বল্পতার কারণে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের নজরে সেটা পড়েনি। মুষ্টিমেয় পত্রিকার সার্কুলেশন সাম্রাজ্যে এই সংবাদের অনুপস্থিতি এবং অবহেলাটুকুই বেশিরভাগ মানুষের মনে রেখাপাত করেছে।
[১৫] এই ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা পাচ্ছি, বাংলাদেশে সার্কুলেশনের ক্ষেত্রে বর্তমানে দুইটি পত্রিকার সাথে সমানে সমান প্রতিযোগী আরও অন্তত ৫-৬টি পত্রিকা শীর্ষস্থানে থাকা জনস্বার্থে এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার স্বার্থে অত্যন্ত জরুরি।
[১৬] শীর্ষ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা প্রতিদ্বন্দিতায় আরও বেশ কয়েকটি পত্রিকা থাকলে সাংবাদিকদের চাকরির নিরাপত্তা, বিকাশ এবং তার সাথে সাথে সম্পাদকের ইনটিগ্রিটিসহ অবস্থান শক্তিশালী হওয়া সহজতর হবে। বড় বড় দু’তিনটি পত্রিকা কোন খবর কিল/ ব্লাকআউট করলে দাপুটে অন্য দু’তিনটা পত্রিকা সেগুলো ফলাও করে প্রকাশ করবে।
[১৭] বাজার অর্থনীতিতে এটা একটি সমাধান সুত্র। সত্যিকারের ’মুক্ত বাজার’ নিশ্চিত করে আইন, সুনীতি, শুদ্ধাচারের সাথে ফেয়ার/ সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করলেই একচেটিয়াত্বের অবসান হয়ে সংবাদপত্রের স্বাধিনতা অনেকখানি নিশ্চিত হবে।
[১৮] বাংলাদেশে মিডিয়া তালিকাভুক্ত, বাংলায় শীর্ষ ২৫টি এবং ইংরেজি শীর্ষ ১৫টি পর্যন্ত প্রকৃত যোগ্যতার ভিত্তিতে সার্টিফিকেশন এবং আইনানুগ, ন্যায়ানুগ শুদ্ধাচার ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা গেলে সংবাদপত্রশিল্প স্বাধীন, শক্তিশালী এবং জন আকাক্সক্ষা পূরণে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
[১৯] উপস্থাপিত তথ্য আনুমানিক তবে সাধারণ আলোচনার জন্য নির্ভরযোগ্য গেস্টিমেইট।
অনুলেখক: ফাহমিদা তিশা
রচনার তারিখ: ২ মে ২০২১
সম্পাদনাঃ আ/হো