কানাডিয়ানদের ওপর যে ৫ প্রভাব ফেলতে পারে মার্কিন নির্বাচন

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, কানাডিয়ানদের মধ্যে আগ্রহ ততই বেড়ে চলেছে। কেননা এর প্রভাব ফেলবে আগামী বছর ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে।

আসন্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বা কমলা হ্যারিস যেই জয়ী হোক না কেন, কানাডার অর্থনীতি ও তার নাগরিকদের জীবনযাত্রার ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।   

কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র দুটি দেশের অর্থনীতি সম্পূরক ও একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের দুটি দেশের মধ্যে প্রতিদিন প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওপরে পণ্য আমদানি রপ্তানি হয়।

গত নির্বাচনে স্থানীয় গণমাধ্যম সিবিসি’র সংবাদ পর্যালোচনায় দুটি দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি বিষয় উঠে এসেছিল। এরমধ্যে এনার্জি , প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, ইমিগ্রেশন ও চায়নার সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে ছিল। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।   

অন্যদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, মার্কিন নির্বাচনে নতুন যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক তাদের সঙ্গে কানাডা সব ধরনের সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে।

জাস্টিন ট্রুডো আরো বলেন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরো গভীর করার জন্য চেষ্টা করবো। আমরা সবসময় কানাডার স্বার্থকে প্রাধান্য দেব। আমরা আরো সহযোগিতা ও বৃহৎ বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি করব।

তবে আসন্ন মার্কিন নির্বাচন নিয়ে কানাডিয়ান অভিবাসীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। ২০২০ সালে তাদের ধারণা ছিল ট্রাম্প নির্বাচিত হলে দেশটিতে অভিবাসী কমতে থাকবে, হয়ে পড়বে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের দেশ। কিন্তু এ ধারণা থেকে অভিবাসীরা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছেন। এর অন্যতম কারণ ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা। গত নির্বাচনে তিনি যে ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছিলেন, এবারের নির্বাচনে তার প্রতিফলন নেই।

গত নির্বাচনে তিনি যেভাবে বর্ণবাদী ও ঘৃণার কথা বলেছিলেন তা সাধারণত তৃতীয় বিশ্বের সাধারণ মানুষ করে থাকে। ট্রাম্পের অভিবাসী নীতির কারণেও গতবার অনেক বাংলাদেশি, ভারতীয়সহ অধিকাংশ অভিবাসীরা তাকে ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকে। কিন্তু এবারের চিত্র পুরোটাই ভিন্ন।    

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চার দিন আগে বৃহস্পতিবার এক টু্ইটে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির নেতা ট্রাম্প টুইটে লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বরোচিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। দেশটিতে দলবদ্ধভাবে তাদের ওপর হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন পুরোপুরিভাবে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে রয়েছে।’

টুইট বার্তাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের বক্তব্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অর্থ বহন করে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

অন্যদিকে কমলা হ্যারিস জয়ী হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট পাবে। সম্প্রতি এবিসি নিউজের এক জরিপে দেখা গেছে, ৪৮ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আছেন হ্যারিস, বিপরীতে মাত্র এক শতাংশ কম সমর্থন ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

এবারের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসরাইল ফিলিস্তানের যুদ্ধসহ বিভিন্ন দেশের যুদ্ধ ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। আর মাত্র হাতে গোনা ৩ দিন বাকি। আগামী ৫ নভেম্বর দেশটির ভোটাররা ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবেন কে হবেন তাদের যোগ্য প্রেসিডেন্ট। সূত্র: সমকাল/ স/হ/ন 01/11/2024 

Related Articles