কানাডায় মাহবুবউল-আলম হানিফের সম্পদ পরিমাণ
- by Suma Akhter
- September 26, 2024
- 94 views
ছবি: সংগৃহীত
কাগজ-কলমে পেশা তাঁর ব্যবসা। সেটাই ছিল আয়ের একমাত্র উৎস। মাত্র ১৫ বছর আগে সে খাতে তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা। মাসের হিসাবে তা দাঁড়ায় ২০ হাজার টাকা। ব্যয় দেখিয়েছিলেন দুই লাখ ১৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ বাড়তি খরচ, বিপদ-আপদ না হলে বছরে তাঁর সঞ্চয় হওয়া সম্ভব ২৫ হাজার টাকা। তাঁর ছিল না কোনো নিজস্ব বাড়ি বা ফ্ল্যাট। ছিল না কোনো কৃষি বা অকৃষি জমি। কোনো কোম্পানিতে ছিল না শেয়ার। ব্যাংকে ছিল না একটি টাকাও। শুধু স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ছিল রাজধানীর নয়াপল্টনে আট লাখ টাকা মূল্যের একটি অফিস স্পেস।
পেশা এখনও তাঁর আগের মতোই; ব্যবসা। কিন্তু আয় মাসে ৩০ লাখ টাকার বেশি। গাজীপুরে কিনেছেন ৩ একর অকৃষি জমি। রাজধানীর গুলশানে ৫ কাঠা ৯ ছটাকের প্লট, কুষ্টিয়ায় ১২ শতাংশ জমির ওপর ৩ তলা ভবন। রয়েছে ছয়টি কোম্পানির শেয়ার। দামি দামি গাড়ি হয়েছে তিনটি। হাতে নগদ থাকা ৩৬ লাখ টাকা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি। অনুমোদন নিয়ে ৩টি অস্ত্রও এখন আছে তাঁর।
হঠাৎ ‘পরশ পাথর’ পাওয়া এই ব্যক্তিটি হলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ। ওপরে উল্লেখ করা সম্পদের তথ্যগুলো হলফনামা আকারে তাঁরই প্রকাশ করা। কিন্তু সমকালের অনুসন্ধানে দেশ-বিদেশে মিলেছে আরও অনেক গোপন সম্পদের খোঁজ। দ্বৈত নাগরিক হিসেবে সংসদ সদস্য (এমপি) হওয়ার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু তিনি কানাডার নাগরিকত্বের তথ্য গোপন করে এমপি হয়েছেন তিনবার।
হলফনামায় হানিফের সম্পত্তি হিসেবে কোনো কৃষি জমি থাকার কথা উল্লেখ নেই। কিন্তু মংলা ভূমি নিবন্ধন কার্যালয়ে তাঁর নামে ৩০টি জমির দলিল পাওয়া যায় ২০১৩ সালেই। সেখানে জমির পরিমাণ ৬৬ দশমিক ৫৯৩ একর। নিবন্ধন কার্যালয়ের তথ্যমতে, হানিফের নামে কেনা ওই জমির সবই কৃষি জমি। কিন্তু এর পরের ১০ বছরেও তিনি সেসব তথ্য হলফনামায় যুক্ত করেননি। হানিফের কেনা এসব জমি সুন্দরবনের ২০০ মিটারের মধ্যে। সেখানে একটি শিপইয়ার্ড স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবস্থানগত ছাড়পত্র নেয় হানিফের প্রতিষ্ঠিত সানমেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড। যদিও পরিবেশ আইন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, সুন্দরবনের চারপাশে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন নিষিদ্ধ।
২০১০ সালে নিবন্ধন পাওয়া সানমেরিন শিপইয়ার্ড হানিফেরই ব্যবসায়িক গ্রুপ কোয়েস্ট গ্রুপ অব কোম্পানির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। এ গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহবুবউল-আলম হানিফ। সানমেরিন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁর ভায়রা কাজী হাসান শরীফ। তাঁর নামেও ওই এলাকায় ১৮০ একর জমি কেনা হয়।
গত বছর ৩০ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হানিফের হলফনামায় ছয়টি কোম্পানির মালিকানার তথ্য দেওয়া হয়। সেগুলো হলো– কোয়েস্ট ইন্টারন্যাশনাল, লুনার এভিয়েশন, কোয়েস্ট অ্যাকুয়াকালচার, সান মেরিল, ব্লু লাইন ইয়ার সার্ভিসেস, এআরএমএস বাংলাদেশ লিমিটেড।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, মাহবুবউল-আলম হানিফ মূলত শেখ হাসিনার সঙ্গে আত্মীয়তার পরশ পেয়েই ‘জিরো থেকে হিরো’ হয়ে যান।
কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের প্রবাসী নেতা খন্দকার মাহতাবুল হক জয়ের ভাষায়, ‘সুইপার থেকে সুপারস্টার– সবকিছুর টাকা তাঁর পেটে।’ গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও পলায়নের পর তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘আমরা ত্যাগী ও প্রবীণ, সকল দলের সাথে আমাদের সৌহার্দ্য। আওয়ামী লীগ করি, আওয়ামী লীগ করব। কিন্তু হানিফ ও আতা কুষ্টিয়া শহর সদরের রাজনীতিতে যদি কোনোদিন ফিরে, তাহলে ওইদিন আদর্শকে কোরবানি দিব।’
হানিফের শুরু যেভাবে
১৯৮৬ সালে ভাগ্যান্বেষণে কুষ্টিয়া থেকে খুলনার দাকোপে গিয়ে মাছের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি। ছন্নছাড়া জীবন নিয়ে ৯০ সালের শুরুতেই ফিরে যান কুষ্টিয়া। বড় ভাই সাবেক সচিব রাশিদুল আলম শেখ হাসিনার পরিবারের জামাই। শেখ হাসিনার ফুফাতো বোনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সে হিসেবে শেখ হাসিনার বেয়াই হন হানিফ। আত্মীয়তার এই সম্পর্কই হানিফের উত্থানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। এই পরিচয়ের পরশ পাথরেই তিনি এক সময় হয়ে যান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
আত্মীয়তার পরিচয়কে কাজে লাগিয়েই কুষ্টিয়া থেকে নৌকা প্রতীকে একাধিকবার মনোনয়ন পান হানিফ। ২০০৮ সালে তাঁকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে হয় আওয়ামী লীগের জোট শরিক জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে আসন সমঝোতার কারণে। ফলে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব দিয়ে পুরস্কৃত করেন শেখ হাসিনা। তবে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে তিনি এমপি হন।
আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগের যেসব নেতা রাতারাতি জিরো থেকে হিরো হয়েছেন, তাদের তালিকায় হানিফ সবার ওপরে।
হানিফের গুলশানের বাড়িটি যেমন
রাজধানীর গুলশানের ৩ নম্বর রোডে ৩২/১ নম্বর বাড়িটি মাহবুবউল-আলম হানিফের। সম্প্রতি দেখানে গিয়ে দেখা যায়, আটতলা বাড়িটির নির্মাণশৈলী খুবই আকর্ষণীয় ও অত্যাধুনিক। জাতীয় সংসদ ভবনের আদলে পুরো বাড়িটি কংক্রিটের ঢালাইয়ে তৈরি। পাঁচ কাঠা জমির ওপর তৈরি বাড়ির প্রতিটি তলায় রয়েছে একটি ফ্ল্যাট। নিচতলায় একটি গার্ডরুম। বাড়ির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সারনিটি শোরস’।
বাড়ির দুটি ফটক। সেগুলোও দৃষ্টিনন্দন ও মজবুত। বাড়ির চারপাশের সীমানা প্রাচীরের ওপর অত্যাধুনিক কাঁটাতারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সীমানা প্রাচীরের ভেতরের অংশের গা ঘেঁষে নানা ধরনের দেশি-বিদেশি গাছ। সম্মুখভাগেও রয়েছে সাজবৃক্ষ। বাড়ির একজন নিরাপত্তাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, বিদেশি জিনিসপত্র দিয়ে আধুনিক কায়দায় সাজসজ্জা করা হয়েছে পুরো বাড়ি। ৫ আগস্টের কয়েক দিন আগে একবার বাড়িতে গিয়েছিলেন হানিফ। এর পর আর যাননি। স্থায়ীভাবেও তিনি কখনও সেখানে থাকেন না। বিভিন্ন সময় তিনি যখন বাড়িতে অবস্থান করতেন, তখন বিলাসবহুল গাড়িতে নানা লোকের সমাবেশ ঘটত।
কুষ্টিয়ার স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক যুগ আগেও হানিফের দৃশ্যমান কোনো ব্যবসা বা সম্পদ ছিল না। কিন্তু এখন কুষ্টিয়া ছাড়াও রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অন্তত ৪টি জেলায় তাঁর সম্পদ ও ব্যবসা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের আত্মীয় হওয়ার সুবাদে দলের বড় পদ পাওয়ার পর থেকেই তাঁর কাছে লোকজনের আনাগোনা বাড়তে থাকে।
কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের টাকা লোপাট
বাবা-মায়ের নামে ভবন করতে কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ ফান্ডের কয়েক কোটি টাকা লোপাট করার অভিযোগ উঠেছে হানিফ ও তাঁর ভাই সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার বিরুদ্ধে। দ্বিতল ভবন নির্মাণ করতে বাজারদরের কয়েক গুণ অর্থ খরচ দেখানো হয়। রাজনৈতিক প্রভাবে হানিফের মা রহিমা ও বাবা আফসারের নামে রহিমা-আফসার একাডেমিক ভবন নির্মাণ করেন ইসলামিয়া কলেজে। আর কাজের ঠিকাদার নিযুক্ত করেন তাঁর চাচাত ভাই আতাউর রহমান আতাকে। সম্পর্কে ভাগনে শামসুর রহমান বাবু নামে একজনকে সভাপতি করেন। দুদক এ অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে।
স্ত্রীর নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
স্ত্রী ফৌজিয়া আলমের নামে কুষ্টিয়ায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইসেন্সও পেয়েছিলেন হানিফ। ‘লালন কলা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন জেলা পরিষদের নতুন ভবনে। সেখানেও তাঁর বিনিয়োগ কয়েক কোটি টাকা। তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার হেলথকেয়ার ফার্মার সিইও হালিমুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ অজয় কুমার সুরেকাসহ কয়েকজন। হানিফের স্ত্রী ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। সহসভাপতি ছিলেন হানিফের আস্থাভাজন হালিমুজ্জামান।
হানিফের বিষয়ে ওয়াকিবহাল আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, হানিফের আয়ের একটা বড় অংশ তিনি কানাডায় পাচার করেছেন। পাশাপাশি দেশে কয়েকটি বড় কোম্পানির সঙ্গে বেনামে ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে স্পেক্ট্রা লিমিটেড ও ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং উল্লেখযোগ্য। কুষ্টিয়ায় হানিফের ভাই আতার মার্কেট, দোকান ও শপিংমলে বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে জেলা পরিষদ, তমিজ উদ্দিন মার্কেট, জেলা পরিষদ মার্কেট, পরিমন টাওয়ার, সমবায় মার্কেটে ৫০টির মতো দোকান আছে। হাউজিংয়ে ১০ তলা বাড়ি আতা ও তাঁর স্ত্রীর নামে হলেও হানিফের অর্থ সেখানে আছে বলে মনে করেন দলের নেতাকর্মী। এ ছাড়া ঢাকা ও কুষ্টিয়ায় তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শেয়ার, ব্যাংকে ডিপোজিট আছে।
এসব বিষয়ে কথা বলতে হালিমুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ অজয় কুমার সুরেকা দাবি করেন, আওয়ামী লীগে তাঁকে জোর করে পদ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে হানিফের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
কয়েক গুণ খরচে নদী খননের কাজ
অনুসন্ধানে জানা গেছে, হানিফ রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে নদী খননের বড় বড় কাজ বাগিয়ে নিতেন। তাঁর নিজের একাধিক ড্রেজার আছে খননের জন্য। সর্বশেষ গড়াই খননের একটি কাজ নেন তিনি। সরকারি খরচের তুলনায় কয়েক গুণ অর্থে তিনি কাজ করেন। এতে তাঁর নিজের ৩টি ড্রেজার কাজে লাগান। প্রতি ড্রেজারের দাম ৩০ কোটি টাকার বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশের বিতর্কিত ঠিকাদার ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিক বসির উদ্দিনের সঙ্গে বেনামে ব্যবসা আছে হানিফের। নদী খনন ও শাসনের কাজ করেন বসির ও হানিফ। বসিরের বিরুদ্ধে কাজের নামে কোটি কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আছে। তবে হানিফের কারণে পার পেয়ে গেছেন বসির।
দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, সর্বশেষ কুষ্টিয়ার মিরপুর ও ভেড়ামারায় পদ্মা নদী শাসনের জন্য এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাস হয়। কাজ ভাগাভাগি হয় হানিফের ঢাকার অফিসে বসে। সেখানে হানিফ একাই ৫০০ কোটি টাকার কাজ নিজের কব্জায় নেন। এসব কাজ পরে বসিরের কাছে বিক্রি করে দেন।
বদির সঙ্গে ব্যবসা
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, খুলনায় হানিফের মাছের ঘেরের সঙ্গে রিসোর্টও আছে। এ ছাড়া জমি আছে পাবনার ঈশ্বরদী, কক্সবাজারের টেকনাফে। আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির সঙ্গে হানিফের ব্যবসার তথ্য পাওয়া গেছে। সেখানেও সম্পদ গড়েছেন হানিফ। অভিযোগ পাওয়া গেছে, বদির মাধ্যমে কুষ্টিয়ায় মাদকের চালান আসত। মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করতেন হানিফের ভাই আতাউর রহমান আতা। এসব কারণে কুষ্টিয়ায় মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেননি তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তারা।
চিংড়ি ঘের
খুলনার দাকোপ ও পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে হানিফের মাছের ঘের রয়েছে। দাকোপ উপজেলার সুতারখালী গ্রামে ৩৫ একর জমিতে রয়েছে হানিফের চিংড়ি ঘের। ২০১৬ সালে নিজের কিছু জমির পাশাপাশি অন্যের জমি লিজ নিয়ে আধা নিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি ঘের শুরু করেন তিনি।
হানিফের ২৫ শতাংশ জমি রয়েছে পটুয়াখালীতে। ২০১১ সালে রাঙ্গাবালী উপজেলার চর মোন্তাজ ইউনিয়নের চর আন্ডায় এ জমি ক্রয় করেন। চিংড়ি ঘের করার জন্য এই জমি কেনা হলেও তা এখন অব্যবহৃত।
রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর হানিফ এলাকায় আসেননি।
কানাডার নাগরিক হানিফ!
করোনাকালে মাহবুবউল-আলম হানিফ একবার কানাডা যান। কিন্তু ওই সময়ে ইউরোপ-আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলোর বিমানবন্দরে যাত্রীদের আসা-যাওয়ায় ছিল ব্যাপক কড়াকড়ি। কানাডার পক্ষ থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ছাড়া অন্য কোনো নাগরিককে তাদের দেশে ঢোকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এমন সময় কানাডায় যান হানিফ। এর পর তাঁর কানাডার নাগরিকত্বের বিষয়টি সামনে আসে। যদিও হানিফ কখনোই তাঁর দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি স্বীকার করেননি। তবে কানাডায় তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলের স্থায়ীভাবে বসবাসের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন।
হানিফের স্ত্রী দুই ছেলে নিয়ে কানাডার ‘বেগমপাড়া’ হিসেবে পরিচিত নর্থ ইয়র্কের ‘বে ভিউ ভিলেজ’ এলাকায় বসবাস করেন। টরন্টোয় হানিফের বেশ কয়েকটি বাড়ি আছে বলে গুঞ্জন থাকলেও তিনি বরাবরই সেটি উড়িয়ে দিয়েছেন।
সূত্র জানিয়েছে, কানাডায় তিনি ভাই ও বোনের নামে সম্পদ করেছেন। এর মধ্যে হানিফের টাকায় সে দেশে একটি গ্যাস স্টেশন করেছেন তাঁর ভাই। এ ছাড়া বাড়ি আছে বোন ও ভাইয়ের নামে। বোনের স্বামীও হানিফের টাকায় নানা ব্যবসা করেন বলে জানা গেছে। সূত্র: সমকাল / স/হ/ন 26/09/2024