কোটা আন্দোলনকারী ইমনের হাসপাতালে মৃত্যু
- by Ibrahim Akon
- August 18, 2024
- 193 views
ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ইমন। ফাইল ছবি
ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ইমন মারা গেছেনকোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পেটে গুলিবিদ্ধ হন কলেজছাত্র মো. ইমন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কলেজছাত্র সেই ইমন মারা গেছেন।
রোববার (১৮ আগস্ট) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
নিহত ইমন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের মো. জুলহাসের ছেলে। তিনি মনিরুজ্জামান খান বিএম কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর হেমনগর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন তিনি।
গত ৪ আগস্ট বিকেলে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের সময় পেটে গুলিবিদ্ধ হন ইমন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসার জন্য ইমনকে মাইক্রোবাসে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে পুলিশ গাড়ি থামায়। পুলিশ যখন জানতে পারে রোগী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ, তখন তারা আহত ইমনকে গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে পেটে লাথি মারে। পরে লাঠি দিয়ে বেদম পেটায়। শুধু ইমনকেই নয়, পুলিশ সদস্যরা গাড়ির চালকসহ সঙ্গীদেরও মারধর করে। পরে অনেক অনুনয়-বিনয় করে ছাড়া পান তারা।
পুলিশ ছেড়ে দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় ইমনকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি। অ্যাম্বুলেন্সের চালক ঢাকা মেডিকেল কলেজে পর্যন্ত যেতে অস্বীকৃতি জানালে ইমনকে উত্তরার লেক ভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুদিনেই খরচ হয় লাখ টাকা। অনেক কষ্টে সে টাকা জোগাড় করে তার পরিবার। এরপর ৬ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সামনের সারিতে ছিলেন কলেজছাত্র ইমন আলী। ১০ বছর বয়সে বাবা হারানো চারজনের পরিবারে ইমনই ছিলেন একমাত্র কর্মক্ষম, ফলে ছেলের চিকিৎসার ব্যয় বহনে এরইমধ্যে সহায় সম্বল বিক্রি করেছেন মা রিনা বেগম।
বাবার মৃত্যুর পর ইমনই হয়ে ওঠেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম। পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে হাল ধরেন পরিবারের। ইমনের ছোট আরও দুই ভাই আর এক বোনের সংসারে মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন রিনা বেগম।
এদিকে গতকাল শনিবার (১৭ আগস্ট) রিয়াজ নামে গুলিবিদ্ধ আরও এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। গত ৪ আগস্ট ধানমন্ডি জিগাতলায় আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন রিয়াজ।
ডেল্টা টাইমস/সিআর/এমই