সামনে যত চ্যালেঞ্জ আওয়ামী লীগের

ছবি: সংগৃহীত

১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরও বিরুদ্ধ পরিবেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম আর রাজপথের তৎপরতা এভাবে পুরোপুরি থমকে দাঁড়ায়নি। একজন পুরনো রাজনীতিবিদ এ কথা বলেছেন।  

জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে যা হয়েছে, তা একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন। গত ৫ আগস্ট থেকে তছনছ অবস্থায় আছে দলটি। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন, দলের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নেতাদের প্রায় সবাই রয়েছেন আত্মগোপনে। এখন নেতাদের জনগণের সামনে যাওয়াই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।

আওয়ামী লীগ বলছে, কর্মসূচির মাধ্যমে সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় হওয়ার কথা। সেরকম পরিস্থিতিও অনেক চ্যালেঞ্জের হবে বলে মনে করছেন দলের নেতারা। বাস্তবে দলটির জন্য বহু চ্যালেঞ্জ দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

১. প্রশাসনিক বাধা, গ্রেফতার এবং মামলার আতঙ্ক আছে নেতাকর্মীদের মধ্যে।

 

২. অভ্যুত্থানের পর দলটির ভঙ্গুর সাংগঠনিক কাঠামো।

৩. দলীয় নেতাদের অনুপস্থিতি।

৪. গণহত্যার অভিযোগ।

রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন, দলটি জনগণের মুখোমুখি কীভাবে হবে তা নিয়ে।

তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আওয়ামী লীগ জনগণের সামনে কীভাবে আবার দাঁড়াবে। কী কৌশল নিয়ে দাঁড়াবে, কী বার্তা নিয়ে নিয়ে দাঁড়াবে, কী উদ্দেশ্য নিয়ে দাঁড়াবে এবং কী কর্মসূচি নিয়ে দাঁড়াবে। আবার জনগণের সামনে আসলেও জনগণ তাদের বার্তাকে কীভাবে নেবে সেটা দেখার বিষয়।

তার মতে, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু তাদের জন্য পরিস্থিতি এখন বেশ কঠিন।

এই বিশ্লেষক আরও বলেন, একটা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যখন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়, তখন এরকম একটি দলকে জনগণের কাছে নানারকম জবাবদিহিমূলক অবস্থায় থাকতে হয়। তো সেখানে আওয়ামী লীগ জনগণকে কীভাবে ফেস করবে, কীভাবে আসলে জনগণের কাছে রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে যাবে, সেটা কিন্তু তাদের জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এই মুহূর্তে।

আওয়ামী লীগের জন্য বাস্তবতা প্রতিকূল- তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

এমনকি গত ৫ আগস্টের পর দলটিকে নিষিদ্ধ করার মতো দাবিও উঠেছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে।

যদিও কোনো কোনো রাজনৈতিক দল আবার এর বিরোধিতাও করেছে।

তবে আদালতে জুলাই গণহত্যার বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে বিচারিকভাবেই নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি আছে আওয়ামী লীগের। ফলে তেমন পরিস্থিতিতে পড়ার আগেই কর্মসূচি বাস্তবায়নের মতো সাংগঠনিক অবস্থা তৈরি করতে চায় আওয়ামী লীগ।

দলটি মনে করছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ভাষায় ‘জনরোষ এখন সময়ের ব্যাপার’।

ফলে বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠে নামার পর সেখানে জনসমর্থন পাওয়া যাবে বলেই আশাবাদী আওয়ামী লীগ। যদিও রাজনীতির জটিল সমীকরণ যে এতো সরলভাবে মিলে যাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।-বিবিসি সূত্র: যুগান্তর/ স/হ/ন 17/01/2025

Related Articles